হিন্দুকুশ পর্বতের নামকরণের আদি ইতিহাস কী ছিল?
নিউজ ডেস্কঃ হিন্দুকুশ পর্বত যেই পর্বতকে ” হিন্দুদের হত্যাকারী ” হিসাবে ব্যক্ত করার হয়।কিন্তু কেন এইরকমের নামকরন পাকিস্তান এবং আফগানিস্থানে কোলে অবস্থিত পর্বতটিকে?
আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের কোলে অবস্থিত হিন্দুকুশ পর্বতমালা পুরাতন বৈদিক সংস্কৃতি গ্রন্থগুলিতে উপরিষয়েন নামে পরিচিত।এছাড়াও সময়ে সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছিল এই পর্বতমালা নাম যেমন- আপর্যত্রস্য পর্বত , ককেশাস ইন্ডিকাস এবং পারোপামিসোস ইত্যাদি।
হিন্দুকুশ শব্দটি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার মতে প্রথম ব্যবহার করেন মধ্যযুগীয় পরিব্রাজক ইবন বতুতা।এই হিন্দুকুশ নামটির মধ্যে কুশ শব্দটি অর্থ বয়েলের ফার্সি-ইংরেজি অভিধান অনুসারে ‘হত্যা করা’ ।আবার, ভাষাবিদ ফ্রান্সিস জোসেফ স্টেইঙ্গাসের মতে, কুশ মানে ‘একজন হত্যাকারী পুরুষ, যে হত্যা করে।প্রাচীনকালে এই পর্বতমালার মধ্য দিয়ে হিন্দু ক্রীতদাসদেরকে মধ্য এশিয়ার দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় রুক্ষ ও বৈরী আবহাওয়া সহ্য করতে না পেরে অধিকাংশ ক্রীতদাস মারা যেত। এইজন্যই হিন্দুকুশ নাম রাখা হয়েছিল বলে মনে করা হয় এই পর্বতমালার ।
11 শতকের পর মুসলিম আধিপত্যের সময়কালে উত্তর ভারতের দাসপ্রথা উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রসার ঘটেছিল।এই ক্রীতদাসদেরকে ব্যবহার করতেন তাদের সেনাবাহিনীতে।এই প্রথাটি ছিল মুসলিম রাজ্যগুলির মধ্যে সেই সময়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রথা। দিল্লি সালতানাত এবং মুঘল সাম্রাজ্যের যুগের মুসলিম ইতিহাসবিদদের মতে, হিন্দু রাজ্যের আক্রমণের পর ক্রীতদাস হিসেবে ভারতীয়দেরকে নেওয়া হতো, এবং রপ্তানি করা হতো মধ্য এশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়ায়।
বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক প্রসার ছিল প্রাচীন হিন্দুকুশ অঞ্চলে। এইধর্মের প্রাচীন শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে হিন্দুকুশের দক্ষিণ ও পশ্চিম প্রান্তে এক বিশালাকার পাথরে খোদাই করা বামিয়ান বুদ্ধ মূর্তি। যেই মূর্তিগুলিকে তালেবানরা 2001 সালে ধ্বংস করে দিয়েছিল।